কম বাজেটে সেরা নিসান রিকন্ডিশন্ড গাড়ি – ২০২৫ সালের দাম ও রিভিউ

 প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন   |   গাড়ি , নিউজ ও রিভিউ

কম বাজেটে সেরা নিসান রিকন্ডিশন্ড গাড়ি – ২০২৫ সালের দাম ও রিভিউ

কম বাজেটে সেরা নিসান রিকন্ডিশন্ড গাড়ি – ২০২৫ সালের দাম ও রিভিউ

📈
মার্কেট ইনসাইট: ২০২৫ সালে জাপানিজ রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজারে নিসানের শেয়ার গত ৫ বছরের তুলনায় ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মূল কারণ হলো Best reconditioned car in Bangladesh এর তালিকায় নিসান এখন টয়োটার সমকক্ষ ফিচার দিচ্ছে প্রায় ১০-১৫ লাখ টাকা কম দামে।

ঢাকার রাস্তায় যানজটে বসে থাকার সময় আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে, টয়োটা গাড়ির পাশাপাশি এখন রাস্তায় নতুন নতুন ডিজাইনের নিসান গাড়ি অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে নিসান রিকন্ডিশন্ড গাড়ি একটি আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৫ সালের এই সময়ে এসে, যখন ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে গাড়ির বাজার অস্থিতিশীল, তখন টয়োটার আকাশছোঁয়া দাম অনেক ক্রেতাকে হতাশ করছে। ঠিক এই মুহূর্তে স্মার্ট ক্রেতারা ঝুঁকছেন নিসানের দিকে, কারণ তারা বুঝতে পেরেছেন যে শুধুমাত্র ব্র্যান্ড লোগোর জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা বেশি খরচ করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

আমি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রির সাথে জড়িত এবং আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বাজেট এবং কোয়ালিটির সঠিক সমন্বয় চাইলে নিসানের বিকল্প নেই। কিন্তু বাজারে এত এত মডেলের ভিড়ে কোন গাড়িটি আপনার জন্য সেরা হবে? Nissan reconditioned car price in Bangladesh এর বর্তমান অবস্থা কী? এই ব্লগে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব নিসানের সেরা ৫টি মডেল, তাদের বর্তমান বাজার দর, এবং কেনার আগে যে বিষয়গুলো না জানলেই নয়। চলুন শুরু করা যাক আমাদের আজকের গাইড, যা আপনাকে আপনার স্বপ্নের গাড়িটি খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।

রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আসলে কী এবং কেন এটি জনপ্রিয়?

অনেকের মনেই রিকন্ডিশন্ড গাড়ি নিয়ে কিছু ভুল ধারণা থাকে। কেউ কেউ মনে করেন এগুলো হয়তো জাপানে নষ্ট হয়ে যাওয়া বা বাতিল করা গাড়ি। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। রিকন্ডিশন্ড বা 'JDM' (Japanese Domestic Market) গাড়িগুলো হলো জাপানে নির্দিষ্ট সময় ব্যবহৃত উচ্চ মানসম্পন্ন গাড়ি। জাপানের ট্রাফিক আইন এবং পরিবেশ রক্ষা আইন অত্যন্ত কঠোর হওয়ার কারণে, সেখানে মানুষ ৩ থেকে ৫ বছর ব্যবহারের পরই গাড়ি বিক্রি করে দেয়। এই গাড়িগুলো যখন বাংলাদেশে আমদানী করা হয়, তখন এগুলোর ইঞ্জিন এবং বডি কন্ডিশন নতুনের মতোই থাকে। বাংলাদেশে আসার পর এগুলোকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় পরিষ্কার ও সামান্য মেরামতের মাধ্যমে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়, যাকে আমরা রিকন্ডিশন্ড বলি।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে Best reconditioned car in Bangladesh কেনার প্রধান কারণ হলো এর সাশ্রয়ী মূল্য এবং সহজলভ্যতা। একটি ব্র্যান্ড নিউ জাপানিজ গাড়ি কিনতে যেখানে ৫০-৬০ লাখ টাকা বা তার বেশি খরচ হতে পারে, সেখানে একই ফিচারের একটি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আপনি ২৫-৩০ লাখ টাকায় পাচ্ছেন। তাছাড়া, এই গাড়িগুলোর এসি সিস্টেম এবং সাসপেনশন বাংলাদেশের আবহাওয়া ও রাস্তার জন্য খুবই উপযোগী। রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার মাধ্যমে আপনি কম বাজেটে প্রিমিয়াম কোয়ালিটি উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন, যা অন্য কোনো ব্র্যান্ড নিউ চাইনিজ বা ইন্ডিয়ান গাড়িতে পাওয়া সম্ভব নয়।

কেন টয়োটা বাদ দিয়ে নিসান কিনবেন?

বাংলাদেশে টয়োটা গাড়ির আধিপত্য অস্বীকার করার উপায় নেই, বিশেষ করে প্রিমিও (Premio) বা অ্যালিয়ন (Allion) মডেলগুলোর। কিন্তু সমস্যা হলো, ২০২৫ সালে এসে এই গাড়িগুলোর দাম এতটাই বেড়েছে যে তা সাধারণ মধ্যবিত্তের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ভালো কন্ডিশনের রিকন্ডিশন্ড টয়োটা প্রিমিও কিনতে আপনাকে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা বাজেট করতে হবে। অথচ, প্রায় একই সাইজ, একই কমফোর্ট এবং আরও উন্নত ফিচারের একটি নিসান ব্লুবার্ড সিলফি আপনি ২০ থেকে ২২ লাখ টাকার মধ্যে পাচ্ছেন। অর্থাৎ, শুধুমাত্র টয়োটা ব্যাজ না থাকার কারণে আপনি ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা সাশ্রয় করতে পারছেন। এই বেঁচে যাওয়া টাকা দিয়ে আপনি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ইনস্যুরেন্স এবং আগামী ৫ বছরের মেইনটেন্যান্স খরচ অনায়াসেই চালিয়ে নিতে পারবেন।

দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তির দিক থেকে নিসান অনেক ক্ষেত্রেই টয়োটার চেয়ে এগিয়ে। টয়োটা তাদের বেস মডেল বা কম দামের প্যাকেজগুলোতে অনেক আধুনিক ফিচার বাদ দেয়। কিন্তু নিসান তাদের এন্ট্রি লেভেল গাড়িতেও পুশ স্টার্ট, ক্লাইমেট কন্ট্রোল এসি, ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা এবং ইমার্জেন্সি ব্রেকিং সিস্টেমের মতো ফিচার দিয়ে থাকে। বিশেষ করে নিসানের 'ই-পাওয়ার' (e-Power) টেকনোলজি টয়োটার হাইব্রিড সিস্টেমের চেয়ে অনেক বেশি ফুয়েল ইফিশিয়েন্ট এবং ড্রাইভিংয়ে ইলেকট্রিক গাড়ির মতো স্মুথ অভিজ্ঞতা দেয়। তাই আপনি যদি ব্র্যান্ডের নামের চেয়ে 'ভ্যালু ফর মানি' বা টাকার সঠিক ব্যবহারে বিশ্বাসী হন, তবে নিসান আপনার জন্য নিঃসন্দেহে সেরা অপশন।

💡
Did You Know? জাপানে নিসান নোট ই-পাওয়ার টানা ৩ বছর সর্বোচ্চ বিক্রিত গাড়ির তালিকায় ছিল। এর মানে হলো খোদ জাপানিরাই টয়োটার চেয়ে নিসানের এই প্রযুক্তির ওপর বেশি আস্থা রাখছে।

রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার আগে চেকলিস্ট

যেকোনো রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার আগে আপনাকে কিছু বিষয় খুব সতর্কতার সাথে যাচাই করতে হবে, নতুবা আপনি বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। প্রথমেই আসে 'অকশন শিট' (Auction Sheet)। এটি হলো গাড়ির জন্মসনদ বা রেজাল্ট কার্ড। গাড়িটি জাপান থেকে বাংলাদেশে আসার আগে কোন অবস্থায় ছিল, তার বিস্তারিত এতে লেখা থাকে। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী অকশন শিট জাল করে একসিডেন্ট করা গাড়িকে ভালো গাড়ি বলে বিক্রি করে দেয়। তাই গাড়ি কেনার সময় অবশ্যই অরিজিনাল অকশন শিট অনলাইনে ভেরিফাই করে নেওয়া আবশ্যিক। চেসিস নম্বর দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই আসল তথ্য বেরিয়ে আসে।

দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গাড়ির মাইলেজ টেম্পারিং। বাংলাদেশে আসার পর অনেক গাড়ির ওডোমিটার বা মাইলেজ কমিয়ে ফেলা হয়। যদি দেখেন গাড়ির বয়স ১০ বছর কিন্তু চলেছে মাত্র ২০,০০০ কিলোমিটার, তবে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে। স্টিয়ারিং হুইল, গিয়ার নব এবং এক্সিলারেটর প্যাডালের ক্ষয় দেখে গাড়ির আসল ব্যবহার বোঝা যায়। এছাড়া, আপনি যদি হাইব্রিড গাড়ি কেনেন, তবে হাইব্রিড ব্যাটারির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ  । ভালো কোনো সার্ভিসিং সেন্টারে নিয়ে গাড়িটি স্ক্যান করিয়ে নিন। Nissan car price in BD যাচাই করার পাশাপাশি গাড়ির কন্ডিশন যাচাই করাটা আপনার দীর্ঘমেয়াদী চালানোর জন্য অপরিহার্য।

নিসান ব্লুবার্ড সিলফি: বাজেটের সেরা সেডান

আপনি যদি একটি সেডান গাড়ি খুঁজছেন যা দেখতে রাজকীয় এবং বসতে আরামদায়ক, তবে নিসান ব্লুবার্ড সিলফি (Nissan Bluebird Sylphy) আপনার তালিকার শীর্ষে থাকা উচিত। এই গাড়িটিকে অনেকে 'গরিবের প্রিমিও' বললেও এর ইন্টেরিয়র কোয়ালিটি অনেক ক্ষেত্রে প্রিমিওর চেয়েও ভালো। বিশেষ করে এর লেগ স্পেস এবং হেডরুম এতটাই প্রশস্ত যে পেছনের সিটে তিনজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ খুব আরাম করে বসতে পারে। এর সোফার মতো নরম সিটগুলো দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তি দূর করে দেয়। ১.৫ লিটার ইঞ্জিনের এই গাড়িটি সিএনজি বা এলপিজি কনভারশনের জন্য খুবই উপযোগী, যা মধ্যবিত্ত পরিবারের জ্বালানি খরচ কমাতে সাহায্য করে।

বাংলাদেশে বর্তমানে সিলফির G11 এবং পরবর্তী মডেলগুলো বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এর সাসপেনশন খুবই সফট টিউন করা, যা ঢাকার ভাঙাচোরা রাস্তায় ঝাঁকুনি অনেকটাই কমিয়ে দেয়। তবে, এর রক্ষণাবেক্ষণে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, বিশেষ করে সিভিটি (CVT) গিয়ারবক্সের ক্ষেত্রে। সঠিক সময়ে এবং সঠিক গ্রেডের (NS-3) গিয়ার অয়েল পরিবর্তন করলে এই গাড়ি আপনাকে বছরের পর বছর সার্ভিস দেবে। ২০-২৫ লাখ টাকার বাজেটে এর চেয়ে ভালো এবং লাক্সারিয়াস সেডান গাড়ি বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া প্রায় অসম্ভব।

নিসান নোট ই-পাওয়ার: হাইব্রিড বা হ্যাচব্যাক প্রেমীদের জন্য

যারা শহরে নিয়মিত ড্রাইভ করেন এবং তেলের খরচ নিয়ে চিন্তিত, তাদের জন্য নিসান নোট ই-পাওয়ার (Nissan Note e-Power) একটি জাদুর প্রদীপ। এটি একটি সাধারণ হাইব্রিড গাড়ি নয়। এর সিস্টেমটি একটু আলাদা—গাড়ির চাকা ঘোরে সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক মোটরের শক্তিতে, আর পেট্রোল ইঞ্জিনটি কাজ করে শুধুমাত্র ব্যাটারি চার্জ করার জেনারেটর হিসেবে। এর ফলে আপনি পান ইলেকট্রিক গাড়ির (EV) মতো ইনস্ট্যান্ট টর্ক এবং অবিশ্বাস্য ফুয়েল মাইলেজ। ঢাকা শহরের জ্যামে এই গাড়িটি প্রতি লিটারে ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে, যা ট্র্যাডিশনাল গাড়ির তুলনায় দিগুণেরও বেশি সাশ্রয়ী।

নিসান নোট দেখতে বাইরে থেকে ছোট মনে হলেও এর ভেতরের স্পেস অবাক করার মতো। বিশেষ করে এর হেডরুম অনেক বেশি হওয়ায় লম্বা যাত্রীরাও স্বাচ্ছন্দ্যে বসতে পারেন। এছাড়া এর ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা এবং 'ইন্টেলিজেন্ট রিয়ার ভিউ মিরর' (যা ক্যামেরার মাধ্যমে পেছনের দৃশ্য দেখায়) পার্কিংকে অনেক সহজ করে দেয়। যারা প্রথম গাড়ি কিনছেন বা পরিবারের জন্য সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি  খুঁজছেন, তাদের জন্য নিসান গাড়ির দাম বিবেচনায় নোট ই-পাওয়ার সেরা পছন্দ। তবে এর ব্যাটারি এবং ইনভার্টার এর যত্ন নিতে হবে এবং ভালো মানের ওয়ার্কশপ থেকে সার্ভিসিং করাতে হবে, কারণ এর প্রযুক্তি সাধারণ মেকানিকরা সহজে বুঝতে পারে না।

নিসান এক্স-ট্রেইল: পরিবারের জন্য সেরা এসইউভি

বাংলাদেশের রাস্তায় এসইউভি বা জিপ গাড়ির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, বিশেষ করে রাস্তাঘাটের অবস্থার কথা বিবেচনা করে। কিন্তু টয়োটা হ্যারিয়ার বা হোন্ডা সিআর-ভি কিনতে গেলে বাজেটে কুলায় না। তাদের জন্য আদর্শ সমাধান হলো নিসান এক্স-ট্রেইল (Nissan X-Trail)। এটি একটি কমপ্যাক্ট ক্রসওভার এসইউভি যা হাইব্রিড এবং নন-হাইব্রিড দুই ভার্সনেই পাওয়া যায়। এর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স অনেক বেশি, তাই গ্রামের উঁচু-নিচু রাস্তা বা শহরের জলমগ্ন রাস্তায় এটি রাজা। এক্স-ট্রেইল এর হাইব্রিড সিস্টেমে ২.০ লিটার ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে, যা হাইওয়েতে চমৎকার শক্তি প্রদান করে এবং ওভারটেকিং খুব সহজ করে দেয়।

এক্স-ট্রেইল এর অন্যতম আকর্ষণ হলো এর প্যানারোমিক সানরুফ এবং প্রিমিয়াম লেদার ইন্টেরিয়র। এতে ৫ সিটার এবং ৭ সিটার—উভয় অপশনই রয়েছে, যা বড় পরিবারের জন্য এটি একটি পারফেক্ট চয়েস। এর 'মোশন সেন্সর টেলগেট' ফিচারটি খুবই কাজের; হাতে বাজার বা ব্যাগ থাকলে শুধু বাম্পারের নিচে পা নাড়ালেই পেছনের ডোর খুলে যায়। Nissan reconditioned car price in Bangladesh এর বাজারে এক্স-ট্রেইল ৩৫-৪০ লাখ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে, যা এর প্রতিযোগী টয়োটা হ্যারিয়ারের চেয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা কম! এই বিশাল মূল্যের পার্থক্যের কারণেই এটি বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় এসইউভি।

⚠️
সতর্কতা: নিসান এক্স-ট্রেইল হাইব্রিড কেনার আগে অবশ্যই এর হাইব্রিড ব্যাটারির কুলিং ফ্যান চেক করে নেবেন। ফ্যানে ধুলো জমে জ্যাম হয়ে গেলে ব্যাটারি গরম হয়ে দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

নিসান ডেজ: ছোট পরিবারের আদর্শ সঙ্গী

যাদের বাজেট খুবই কম, যেমন ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার মধ্যে, এবং মূলত শহরের ভেতরেই যাতায়াত করেন, তাদের জন্য নিসান ডেজ (Nissan Dayz) বা ডেজ রুক্স (Dayz Roox) চমৎকার অপশন। এটি ৬৬০ সিসির একটি 'কেই কার' (Kei Car)। ছোট ইঞ্জিন হওয়ার কারণে এর ট্যাক্স এবং ফিটনেস খরচ অনেক কম। কিন্তু ছোট হলেও এর ইন্টেরিয়র ডিজাইন এবং ফিচার আপনাকে মুগ্ধ করবে। এতে টাচ প্যানেল এসি, পুশ স্টার্ট এবং অনেক ক্ষেত্রে ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরাও থাকে। এর বক্সি শেপ ডিজাইনের কারণে ভেতরে অনেক জায়গা পাওয়া যায়।

নিসান ডেজ-এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর ফুয়েল ইফিসিয়েন্সি এবং পার্কিং সুবিধা। ঢাকা শহরের মতো জায়গায় যেখানে পার্কিং সোনার হরিণ, সেখানে নিসান ডেজ যেকোনো সরু গলিতে বা ছোট জায়গায় পার্ক করা যায়। এর টার্নিং রেডিয়াস খুবই কম, তাই ইউ-টার্ন নেওয়া খুব সহজ। তবে মনে রাখবেন, হাইওয়েতে বা লং ড্রাইভে এই গাড়ি খুব একটা আরামদায়ক নাও হতে পারে কারণ এর ইঞ্জিন ক্ষমতা সীমিত এবং হাই স্পিডে এটি কিছুটা নড়বড়ে মনে হতে পারে। কিন্তু স্কুল, ডিউটি, অফিস যাতায়াত বা শপিংয়ের জন্য এটি ঢাকার রাস্তায়  চলাচলের জন্য খুবি ভালো। 

নিসান গাড়ির দামের তালিকা (২০২৫)

গাড়ির দাম মডেল ইয়ার, অকশন গ্রেড, কালার এবং ফিচারের ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়। তবুও আপনাদের বাজেট পরিকল্পনার সুবিধার জন্য নিচে একটি আনুমানিক মূল্য তালিকা দেওয়া হলো যা ২০২৫ সালের বাজার দর অনুযায়ী তৈরি।

মডেলের নাম বডি টাইপ আনুমানিক দাম (রিকন্ডিশন্ড) বিশেষত্ব
Nissan Bluebird Sylphy Sedan (1500cc) ২০ - ২৫ লক্ষ টাকা বিশাল স্পেস ও আরামদায়ক সিট
Nissan Note e-Power Hatchback (1200cc) ১৮ - ২২ লক্ষ টাকা সেরা মাইলেজ ও সিটি ড্রাইভ
Nissan X-Trail Hybrid SUV (2000cc) ৩৫ - ৪২ লক্ষ টাকা অফ-রোড ক্ষমতা ও ফ্যামিলি কার
Nissan Juke Crossover (1500cc) ১৮ - ২৪ লক্ষ টাকা ইউনিক ডিজাইন ও স্পোর্টি লুক
Nissan Dayz / Roox Micro (660cc) ১২ - ১৬ লক্ষ টাকা বাজেট ফ্রেন্ডলি ও কম খরচ
Nissan Kicks Compact SUV ২৮ - ৩২ লক্ষ টাকা ই-পাওয়ার টেকনোলজি ও স্টাইল

নোট: ডলারের রেট এবং সরকারি শুল্কের পরিবর্তনের সাথে সাথে এই দাম কম-বেশি হতে পারে। সঠিক দাম জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

গাড়ির যত্ন ও স্পেয়ার পার্টস প্রাপ্যতা

অনেকের মনে একটি বড় ভয় থাকে যে টয়োটা ছাড়া অন্য কোনো ব্র্যান্ডের গাড়ির পার্টস বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা এবংএটি  ১০ বছর আগের চিত্র। বর্তমানে নিসান রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে ঢাকার ধোলাইখাল, বাংলা মোটর এবং মিরপুর ১০ নম্বরের পার্টস মার্কেটে নিসানের সব ধরণের পার্টস পাওয়া যায়। অরিজিনাল জাপানিজ পার্টস থেকে শুরু করে রিকন্ডিশন্ড পার্টস এবং কিছুটা কম দামের চাইনিজ ও থাইল্যান্ডের পার্টস—সবই এখন হাতের নাগালে। হেডলাইট, বাম্পার, সাসপেনশন থেকে শুরু করে ইঞ্জিনের ছোটখাটো সেন্সরও এখন সহজেই পাওয়া যাচ্ছে।

এছাড়া, নিসানের সার্ভিসিং এখন আর জটিল কোনো বিষয় নয়। নাভানা (নিসানের অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটার) ছাড়াও ঢাকা এবং চট্টগ্রামে এখন অনেক স্পেশালাইজড ওয়ার্কশপ গড়ে উঠেছে যারা শুধুমাত্র নিসান এবং হাইব্রিড গাড়ি নিয়ে কাজ করে। তাদের কাছে নিসানের জন্য প্রয়োজনীয় সার্ভিসিং স্ক্যানার এবং টুলস রয়েছে। আপনি যদি নিয়মিত মেইনটেন্যান্স করেন, যেমন সময়মতো ইঞ্জিন অয়েল, অয়েল ফিল্টার এবং এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করেন, তবে নিসান গাড়ি আপনাকে টয়োটার মতোই দীর্ঘস্থায়ী এবং ঝামেলামুক্ত সেবা দিতে সক্ষম। পার্টস বা মেকানিক নিয়ে অহেতুক ভীতি ঝেড়ে ফেলুন।

নিসানের লাইফলাইন: সিভিটি (CVT) গিয়ারবক্সের যত্ন

নিসান গাড়ির পারফরম্যান্স ধরে রাখার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এর সিভিটি (Continuously Variable Transmission) গিয়ারবক্সের সঠিক যত্ন নেওয়া। টয়োটার ট্র্যাডিশনাল গিয়ারবক্সের চেয়ে সিভিটি প্রযুক্তি অনেক বেশি স্মুথ এবং ফুয়েল সাশ্রয়ী, কিন্তু এটি কিছুটা সংবেদনশীল। অনেকেই ভুল করে সাধারণ গিয়ার অয়েল (ATF) নিসানের সিভিটিতে ব্যবহার করেন, যা গিয়ারবক্স নষ্ট হওয়ার প্রধান কারণ। নিসানের জন্য নির্দিষ্ট গ্রেডের অয়েল, যেমন NS-2 বা NS-3 ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। গাড়ির ম্যানুয়াল বা ডিপস্টিকে লেখা গ্রেড দেখেই ফ্লুইড পরিবর্তন করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, বাংলাদেশের ট্রাফিক জ্যাম এবং গরম আবহাওয়ার কারণে প্রতি ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ কিলোমিটার পরপর সিভিটি ফ্লুইড পরিবর্তন করা উচিত। যদিও জাপানি ম্যানুয়ালে এটি আরও দেরিতে পরিবর্তনের কথা বলা থাকে, কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এছাড়া, গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার সাথে সাথেই দ্রুত এক্সিলারেটর চাপ না দিয়ে ধীরে ধীরে গতি বাড়ানো উচিত, এতে গিয়ারবক্সের ওপর চাপ কম পড়ে। সামান্য এই সচেতনতাটুকু অবলম্বন করলেই আপনার নিসান গাড়ির গিয়ারবক্স বছরের পর বছর নতুনের মতো পারফরম্যান্স দেবে।

রেজিস্ট্রেশন খরচ ও পদ্ধতি (২০২৫ আপডেট)

রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো বিআরটিএ (BRTA) থেকে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা। ২০২৫ সালে গাড়ির সিসি (Engine Capacity) অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারিত হয়। ১৫০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির জন্য (যেমন ব্লুবার্ড সিলফি বা নোট) রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন এবং ডিজিটাল নম্বর প্লেট মিলিয়ে প্রাথমিক খরচ পড়ে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মতো। ২০০০ সিসি বা তার বেশি হলে (যেমন এক্স-ট্রেইল) এই খরচ আরও বেড়ে যায় এবং প্রতি বছর ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার খরচও বেশি হয়।

সাধারণত শো-রুমগুলোই নির্দিষ্ট সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে রেজিস্ট্রেশনের পুরো প্রসেসটি করে দেয়, যা নতুন ক্রেতাদের জন্য সুবিধাজনক। এতে আপনার সময় বাঁচে এবং বিআরটিএ-র দালালের খপ্পরে পড়ার ঝুঁকি থাকে না। তবে আপনি চাইলে নিজেও বিআরটিএ অফিসে গিয়ে কাজটি করতে পারেন, এখন অনেক কিছুই অনলাইনে করা যায়। মনে রাখবেন, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া গাড়ি রাস্তায় নামানো দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এতে ট্রাফিক কেসের সম্মুখীন হতে পারেন। এছাড়া আপনার ইনকাম ট্যাক্স ফাইল আপডেটেড রাখা জরুরি, কারণ ট্যাক্স ফাইলের ওপর ভিত্তি করে গাড়ির অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (AIT) কম-বেশি হতে পারে।

শো-রুম নাকি পোর্ট থেকে কিনবেন?

রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার জন্য ক্রেতাদের সামনে দুটি প্রধান বিকল্প থাকে: ঢাকার বিভিন্ন শো-রুম (যেমন বারিধারা, কাকলি, তেজগাঁও) অথবা সরাসরি মোংলা বা চট্টগ্রাম পোর্ট থেকে। শো-রুম থেকে কেনার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি গাড়িটি সামনাসামনি দেখে, টেস্ট ড্রাইভ দিয়ে এবং প্রয়োজনে আপনার পরিচিত মেকানিক দিয়ে চেক করে নিতে পারেন। শো-রুমগুলো সাধারণত রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক লোন প্রসেসিং এবং বিক্রয় পরবর্তী সেবা দিয়ে থাকে। তবে এখানে শোরুমের ব্যবস্থাপনা খরচ এবং লাভের কারণে গাড়ির দাম পোর্টের তুলনায় কিছুটা বেশি পড়ে।

অন্যদিকে, পোর্ট থেকে কিনলে আপনি হয়তো ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা কমে গাড়িটি পেতে পারেন। অনেক ব্রোকার বা এজেন্ট আছে যারা পোর্ট থেকে গাড়ি খালাস করে দেয়। কিন্তু এখানে ঝুঁকি অনেক বেশি। গাড়ির কন্ডিশন না দেখে কেনা, পোর্টের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, এবং গাড়ি ঢাকায় আনার ঝুঁকি সামলানো নতুন ক্রেতার জন্য বেশ কঠিন হতে পারে। আমি ব্যক্তিগতভাবে পরামর্শ দেব, আপনি যদি এই লাইনে অভিজ্ঞ না হন, তবে বিশ্বস্ত কোনো শো-রুম থেকেই গাড়ি কিনুন। এতে আপনি মানসিক শান্তিতে থাকবেন এবং ওয়ারেন্টি বা সার্ভিসিং সুবিধা পাবেন। সামান্য কিছু টাকা বাঁচাতে গিয়ে বড় ঝুঁকি না নেওয়াই ভালো।

উপসংহার: চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

পরিশেষে বলা যায়, কম বাজেটে সেরা নিসান রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনা বর্তমান বাজারে একটি অত্যন্ত স্মার্ট এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। আপনি যদি গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে আধুনিক ফিচার, আরামদায়ক যাত্রা এবং সাশ্রয়ী দামের প্যাকেজ চান, তবে নিসান আপনার জন্য ভালো চয়েস । টয়োটার পেছনে অতিরিক্ত টাকা খরচ না করে সেই টাকা দিয়ে আপনি আপনার পরিবারের অন্য প্রয়োজন মেটাতে পারেন অথবা গাড়ির সাজসজ্জায় ব্যয় করতে পারেন।

আশা করি এই দীর্ঘ গাইডটি আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।ব্লুবার্ড  সিলফির আভিজাত্য, নোট ই-পাওয়ারের সাশ্রয়ী প্রযুক্তি, নাকি এক্স-ট্রেইলের অফ-রোড ক্ষমতা—পছন্দ সম্পূর্ণ আপনার। শুধু মনে রাখবেন, কেনার আগে অবশ্যই ভালো করে যাচাই-বাছাই করবেন, অকশন শিট চেক করবেন এবং বিশ্বস্ত জায়গা থেকে কিনবেন। আপনার গাড়ির স্বপ্ন পূরণ হোক, এবং আপনার যাত্রা হোক নিরাপদ ও আনন্দময়। শুভকামনা রইল!

Key Takeaways (সারসংক্ষেপ):
  • বাজেট সাশ্রয়: নিসান গাড়ি সমমানের টয়োটার চেয়ে ১০-১৫ লাখ টাকা সস্তা।
  • কমফোর্ট কিং: সেডান হিসেবে নিসান ব্লুবার্ড সিলফি অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
  • মাইলেজ মাস্টার: শহরের জ্যামে নোট ই-পাওয়ার সেরা (২৫+ কিমি/লিটার)।
  • মেইনটেন্যান্স: সিভিটি গিয়ার অয়েলের সঠিক গ্রেড ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।

আপনি কি আপনার স্বপ্নের নিসান গাড়িটি খুঁজছেন?

আমাদের ওয়েবসাইটে ভেরিফাইড সেলারদের সেরা ডিলগুলো দেখুন আজই! অকশন শিট ভেরিফাইড গাড়ি কিনুন নিশ্চিন্তে।

নিসান গাড়ির কালেকশন দেখুন

সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)

১. নিসান গাড়ির স্পেয়ার পার্টস কি বাংলাদেশে সহজে পাওয়া যায়?

হ্যাঁ, অবশ্যই। এক সময় নিসান গাড়ির পার্টস নিয়ে কিছুটা সমস্যা ছিল, কিন্তু বর্তমানে নিসান রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে এর পার্টস এখন বেশ সহজলভ্য। ঢাকার ধোলাইখাল, বাংলা মোটর, মিরপুর ১০ নম্বর এবং চট্টগ্রামের কদমতলীতে নিসানের অরিজিনাল এবং রিকন্ডিশন্ড উভয় ধরণের পার্টস প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। হেডলাইট, বাম্পার, সাসপেনশন থেকে শুরু করে ইঞ্জিনের ছোটখাটো পার্টসও এখন হাতের নাগালে। এছাড়া অনলাইনেও অনেক শপ এখন হোম ডেলিভারি দিচ্ছে। তাই পার্টস নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।

২. নিসান হাইব্রিড গাড়ির ব্যাটারি নষ্ট হলে খরচ কেমন পড়ে?

নিসান হাইব্রিড বা ই-পাওয়ার গাড়ির ব্যাটারি সাধারণত বেশ দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং সহজে নষ্ট হয় না। তবে ৫-৭ বছর বা ১ লাখ কিলোমিটারের বেশি চলার পর ব্যাটারির পারফরম্যান্স কমতে পারে। বাংলাদেশে বর্তমানে নিসান নোট বা এক্স-ট্রেইলের হাইব্রিড ব্যাটারি পরিবর্তন করতে মডেলভেদে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে। রিকন্ডিশন্ড ব্যাটারি কিছুটা কম দামে পাওয়া যায়। তবে হাইব্রিড গাড়ির জ্বালানি সাশ্রয় বিবেচনা করলে এই খরচটি দীর্ঘমেয়াদে পুষিয়ে যায়। ভালো মানের ওয়ার্কশপে ব্যাটারির সেল রিপেয়ার করার সুবিধাও এখন বাংলাদেশে আছে।

৩. টয়োটা নাকি নিসান—কোনটির এসি পারফরম্যান্স ভালো?

বাংলাদেশের গরম আবহাওয়ায় গাড়ির এসি পারফরম্যান্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঐতিহাসিকভাবে টয়োটার এসি খুব শক্তিশালী এবং দ্রুত ঠান্ডা করার জন্য পরিচিত। তবে আধুনিক নিসান গাড়িগুলোর এসি সিস্টেমও অত্যন্ত উন্নত। বিশেষ করে নিসানের 'ক্লাইমেট কন্ট্রোল' ফিচার এবং এসি ভেন্টের ডিজাইন খুব কার্যকরভাবে পুরো কেবিন ঠান্ডা করতে পারে। ব্লুবার্ড সিলফি বা এক্স-ট্রেইলের এসি পারফরম্যান্স টয়োটা প্রিমিও বা হ্যারিয়ারের সমতূল্য। নিয়মিত এসি ফিল্টার পরিষ্কার এবং গ্যাস চেক করলে নিসানের এসি নিয়েও গরমে কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয় না।

৪. নিসান গাড়িতে কি সিএনজি বা এলপিজি কনভারশন করা নিরাপদ?

নিসানের পেট্রোল ইঞ্জিনগুলো, বিশেষ করে ১.৫ লিটার ইঞ্জিনগুলো (যেমন ব্লুবার্ড সিলফিতে ব্যবহৃত হয়) সিএনজি বা এলপিজি কনভারশনের জন্য বেশ উপযোগী। তবে হাইব্রিড বা ই-পাওয়ার মডেলগুলোতে কনভারশন না করাই ভালো, কারণ এতে জটিল ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম থাকে। আপনি যদি সাধারণ পেট্রোল ইঞ্জিনের নিসান কেনেন, তবে নির্দ্বিধায় এলপিজি করতে পারেন। বর্তমানে সিকুয়েন্সিয়াল এলপিজি সিস্টেম ইঞ্জিনের কোনো ক্ষতি ছাড়াই ভালো পারফরম্যান্স দেয়। তবে কনভারশনের পর নিয়মিত স্পার্ক প্লাগ এবং টিউনিং চেক করা জরুরি।

৫. রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার সময় 'অকশন গ্রেড ৪' মানে কী?

জাপানি অকশন হাউসে গাড়ির মান যাচাই করার জন্য গ্রেডিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। 'গ্রেড ৪' মানে হলো গাড়িটি খুব ভালো অবস্থায় আছে। এতে বড় কোনো দুর্ঘটনা বা মেরামতের ইতিহাস নেই, তবে সামান্য কিছু স্ক্র্যাচ বা ডেন্ট থাকতে পারে যা খুব একটা চোখে পড়ে না। সাধারণত গ্রেড ৫ হলো একেবারে নতুনের মতো, আর গ্রেড ৩ বা ৩.৫ মানে মোটামুটি ভালো কিন্তু কিছু কাজ করানো লাগতে পারে। গ্রেড R বা RA মানে গাড়িটি আগে কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল এবং মেরামত করা হয়েছে। তাই রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার সময় অন্তত গ্রেড ৪ বা ৪.৫ এর গাড়ি কেনা নিরাপদ।